রংপুরে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের শাস্তি

দীর্ঘ ১১ বছর পর এ মামলার রায়ে শাস্তি পেল আসামিরা

স্টাফ রিপোর্টার ♦ দিনের আলোয় হাজার হাজার মানুষের সমাগমে শালিষের নামে হ্যাপি আকতার ও সাহিদা বেগমকে নষ্টা ও দুঃচরিত্রা মহিলা আখ্যায়িত করে হাত পা বেধে বিবস্ত্র করে মধ্য যুগী পন্থা অবলম্বন করে নির্যাতন এবং শ্লীলতা হানির ঘটনার দীর্ঘ ১১ বছর পর এ মামলার রায়ে শাস্তি পেল রংপুর বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানসহ আরও ৮ আসামি। মামলা প্রধান আসামী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আয়নাল হক সহ তিনজনকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং ৬ আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিচারক রোকনুজ্জামান এ রায় প্রদান করেন। মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৫ জুন রাজারামপুর গ্রামের দুই হতদরিদ্র নারী হ্যাপি আখতার ও শাহিদা বেগমকে নষ্টা ও দুঃচরিত্রা আখ্যা দিয়ে তৎকালিন ইউপি চেয়ারম্যান আয়নাল হকের নির্দেশে অন্যান্য আসামীরা তাদের (হ্যাপি ও শাহিদা)-কে বাড়ি থেকে অপহরন করে মারতে মারতে রাজারামপুর কাশিপুর লিচু বাগান এলাকায় একটি মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে শালিষের নামে ইউপি চেয়ারম্যান আয়নাল হকের উপস্থিতিতে দুই নারীর হাত পাঁ বেঁধে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়। এ সময় তারা কয়েক দফা জ্ঞান হারিয়ে ফেললেও তাদের উপর নির্যাতন অব্যাহত রাখা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামী আয়নাল হক সহ ৫৬ জনকে আসামী করা হয়। পুলিশ তদন্ত শেষে ৫৬ জন আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলার বিচার চলাকালিন দুই আসামী মৃত্যু বরন করে। পরে মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিজ্ঞ বিচারক আসামী আয়নাল চেয়ারম্যান, মহুবুল ও চিকনা এনামুলকে দোষি সাব্যস্ত করে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। অপর ৬ আসামী ইলিয়াছ , বাবলু , সেকেন্দার মন্ডল , রউফ মন্ডল, মোটা এনামুল ও মজম আলীকে ৩ বছর করে কারাদন্ডের আদেশ দেন। সেই সাথে বাকী ৪৫ আসামীকে খালাস প্রদান করেন। রায় ঘোষনার পর সরকার পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম তুহিন জানান মামলাটি সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় আসামীদের সাজা দেয়া হয়েছে। এ রায়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন এর মাধ্যমে আদালত বার্তা দিলেন নারীদের প্রতি সহিংসতা করলে তার শাস্তি পেতে হবে। অন্যদিকে ভিকটিম দুই নারী হ্যাপি আখতার ও শাহিদা বেগম রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।