পৃথিবীর মৃত্যুবরণকারী ৩০ ভাগ মানুষ মারা যাচ্ছে তাপজনিত অসুস্থ্যতায়
রংপুরে চিকিৎসকদের বৈজ্ঞানিক সেমিনার
স্টাফ রিপোর্টার ♦ প্রতি বছর পৃথিবীতে মৃত্যুবরণকারীদের শতকরা ৩০ ভাগ মানুষ তাপজনিত অসুস্থ্যতায় মারা যাচ্ছেন। ২০০৩ সালে তাপজনিত অসুস্থ্যতায় মারা যাওয়ার সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার। ২০৫০ সালে যা আড়াই লক্ষ অতিক্রম হওয়ার শংঙ্কা রয়েছে। নবজাতক, শিশু, বৃদ্ধ, রোগাক্রান্ত ব্যক্তি ও গর্ভবতী নারীরা তাপজনিত অসুস্থ্যতা বা হিটস্ট্রোকের ঝুঁকিতে বেশি রয়েছে। তীব্র তাপদাহের মাঝে দীর্ঘ সময় বাহিরে কাজ করার সময় মানুষের হিটস্ট্রোক হচ্ছে। তাপপ্রদাহের কারণে হৃদযন্ত্র, লিভার ও কিডনীসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ঠিকমত কাজ না করায় মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আয়োজিত কলেজের লেকচার গ্যালারীতে বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসব তথ্য তুলে ধরেন।
চিকিৎসকরা জানান, ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় যদি কেউ দীর্ঘ সময় ধরে রোদে কাজ করে তবে তার হিটস্ট্রোকের শংঙ্কা রয়েছে। ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা থাকলে মানুষ তাপজনিত অসুস্থ্যতায় ভোগেন। এতে তাদের শারীরিক দূর্বলতা, মূর্ছা যাওয়া, পেশী সংকোচনসহ নানা সমস্যা হয়। হিটস্ট্রোকসহ তাপজনিত অসুস্থ্যতা থেকে রক্ষায় প্রয়োজন ছাড়া রোদে বাহিরে বের না হওয়া, বেশি পরিমান পানি, স্যালাইন খাওয়া, ঢিলেঢালা কাপড় পড়া, ছাতা মাথায় বাহিরে বের হওয়া, রোদে একটানা সর্বোচ্চ দুই ঘন্টার বেশি কাজ না করা, বিশ্রাম নেওয়া, চোখে-মুখে পানি ঝাপটা দেওয়া এবং প্রসাবের রং হলুদ হলে প্রয়োজন মত পানি পান করতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে ঘনঘন বুকের দুধ খাওয়ানো, গা-মুছে দেওয়া, ফ্যানের নিচে রাখা এবং বাহিরে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখতে হবে। গর্ভবতী মায়েদের রান্নার সময় অনেক ঘাম ঝরে তাই, রোদের প্রকোপ বাড়ার আগেই তাদের রান্না কাজ সেরে ফেলা এবং বেশি বেশি করে তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন গাইনী বিশেষজ্ঞরা। শিশু বিশেষজ্ঞরা নবজাতকের ক্ষেত্রে হালকা কাপড় পড়ানো, জন্ডিসের কথা চিন্তা করে রোদে না দেওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া তাপদাহে ডায়াবেটিক রোগীরা অনেক ঝুঁকিতে থাকেন। তাদের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা, বেশি বেশি পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয় সেমিনারে। রংপুর মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ সরওয়ার জাহানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মাহফুজার রহমান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ ইউনুস আলী, উপ-পরিচালক ডাঃ আখতারুজ্জামান। ডাঃ রাহেনুর মন্ডল আপেলের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাঃ মাহফুজুল আনোয়ার। এতে রংপুর মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, চিকিৎসক ও সাংবাদিকরা অংশ নেন। ### ২৩-০৪-২৪ইং