পদ্মপাতার জলে জলময়ুরের জীবন
এহসানুল হক সুমন ♦ জলময়ুর। নাম ময়ুর হলেও তার সঙ্গে এদের কোন মিল নেই। জলে কাটে জলময়ুরের জীবন। সারাদিন পদ্মপাতার উপর ছোটাছুটি। পদ্মপাতার উপর খড়কুটো দিয়ে এরা বাঁধে বাসা। পুরুষ জলময়ুর শব্দ করে স্ত্রীকে কাছে ডাকে। এক সময় একে অপরকে মানিয়ে নিয়ে ঘর বাঁধে।
স্ত্রী জলময়ুর ৪টি ডিম পেরে চলে যায়। এরপর ডিমের দায়িত্ব পুরুষ জলময়ুরের। টানা ২৬ দিন ডিমে তা দেয় পুরুষ জলময়ুর। একে একে ডিম ভেদ করে বেরিয়ে আসে ছানা। মাতৃহীন ছানাকে পরম মায়ায় বুকে আগলে রাখে বাবা ময়ুর। চিলসহ বিভিন্ন প্রাণি থেকে সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখে বাবা। দু’মাস পর্যন্ত বাবার কাছে থাকে শিশু জলময়ুর। এরপর প্রকৃতির নিয়মে মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে জীবনচক্রের তারাও বাবা-মা হয়ে বংশ বিস্তার শুরু করে।
পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি বাসায় ডিম দেয়ার পর স্ত্রী জলময়ুর ১২ থেকে ২০ দিনের মাথায় আরেকটি পুরুষ জলময়ুরের সাথে বাসা বাঁধে। সেখানেও ডিম দিয়ে চলে যায় স্ত্রী জলময়ুর। এ প্রজাতির পাখির বংশ বিস্তার হয়তো কোন হুমকি রয়েছে যা এখনও চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি এ প্রজাতির পাখি রংপুরেও দেখা গেছে। অনিন্দ্য সুন্দর এ প্রজাতির পাখি যে কোন প্রকৃতিপ্রেমীদের মন কাড়বে।
পাখি প্রেমী প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, রংপুরের বেশ কিছু বিলাঞ্চলে এ পাখিগুলো দেখা যায়। সর্বশেষ মিঠাপুকুর উপজেলার বলদীপুকুরে পাখিটিকে দেখা গেছে। এ পাখিটি দেখতে খুবই সুন্দর। তবে তাদের আবাসস্থল বিলগুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে এ পাখির জীবনচক্র সংকটের মুখে পড়েছে।