স্ত্রী মারা গেছে ক্যানসারে, সুমনের দুটি কিডনি বিকল

দুরারোগ্য এই ব্যাধির চিকিৎসা করতে গিয়ে বর্তমানে তিনি নিঃস্ব

স্ত্রী মারা গেছে ক্যানসারে, সুমনের দুটি কিডনি বিকল

স্টাফ রিপোর্টার ♦ শেখ মাহফুজুল বারী সুমন। পেশায় একজন ব্যবসায়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় করতেন বামধারার ছাত্র রাজনীতি। শহরে তার নামডাকও রয়েছে। দক্ষ ব্যবসায়ী দানশীল হিসেবেও পরিচিত তিনি। মানুষের জন্য দুহাত উজার করে দান করতে কখনো দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েননি। কিন্তু আজ সেই মাহফুজুল বারী সুমন নিজেই অন্যের সহায়তায় বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে সুমনের সবকিছু যেন এলোমেলো হয়ে গেছে। হাসিমাখা মুখটি এখন বিবর্ণ।

সুখে থাকার গল্পটাও দুঃখের নোনাজলে ভাসছে। ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট ক্যানসারের কাছে হেরে গেছেন তার সহধর্মিণী গুলে নূর আখতার। প্রিয়তমা স্ত্রীকে হারিয়ে ভেঙে পড়েন সুমন। ওই সময় বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে নাকানি চুবানি খান তিনি।

স্ত্রীর মৃত্যু, অর্থসংকট আর ব্যবসায় ক্ষতি সবমিলিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। এরই মধ্যে তার দুই কিডনি বিকল হয়ে পড়ে। এছাড়া হৃদরোগে আক্রান্ত মাহফুজুল বারী সুমনের হার্টে পাঁচটি রিং পরানো হয়। শ্বাসযন্ত্রে পানি জমে আছে। শরীর-মন ভালো না থাকা সুমন একটি চোখের দৃষ্টিশক্তিও হারিয়েছেন। চোখের রেটিনায় সমস্যা থাকায় এখন তিনি ডান চোখে কিছু দেখতে পান না। রোগে-শোকে আক্রান্ত সুমনের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্দিন।

পঞ্চাশোর্ধ্ব মাহফুজুল বারী সুমন রংপুর নগরীর ধাপ পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন শ্যামলী লেনে থাকেন। তার মা গোলে আফরোজ রংপুর নগরীর লালকুঠি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। সুমন রংপুর জিলা স্কুলের এসএসসি ১৯৮৭ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন রংপুর সরকারি কলেজে। পরবর্তীতে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে (১৯৯৩ ব্যাচ) উচ্চতর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তার একমাত্র মেয়ে শেখ তাসনুভা তাসনিম ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গার্লস পাবলিক স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ছেন।

নব্বই দশকের তুখোড় এই ছাত্রনেতা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দীর্ঘদিন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এখন তিনি বাসা থেকে প্রতিদিন একবার করে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছেন ডায়ালাইসিস করার জন্য। সুমন কিডনি, ডায়াবেটিস, হার্ট ব্লকসহ আরও কিছু জটিল রোগে আক্রান্ত। দুরারোগ্য এই ব্যাধির চিকিৎসা করতে গিয়ে বর্তমানে তিনি নিঃস্ব। তার পক্ষে আর কোনোভাবেই চিকিৎসার খরচ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সুমনকে বাঁচাতে হলে জরুরি ভিত্তিতে কিডনি প্রতিস্থাপন করাতে হবে। শুধু কিডনি প্রতিস্থাপন করতেই ৩৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। এছাড়া তার চোখের শারীরিক অন্যান্য রোগের চিকিৎসা করতে আনুমানিক ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এত টাকা এখন মাহফুজুল বারী সুমনের পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে অসুস্থ বাবার পাশে বসে সেবাযত্ন করতে থাকা মেয়ের চোখে প্রতিনিয়ত পানি ঝরছে। অসময়ে মাকে হারিয়ে যে শোক বুকে চাপা দিয়ে রেখেছিল তাসনিম, সেই কান্না এখন বাবার অসুখে দ্বিগুণ বেড়েছে। অবস্থায় বাবাকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবান মানুষদের কাছে চিকিৎসা সহায়তার আকুতি জানিয়েছেন মেয়ে শেখ তাসনুভা তাসনিম।

এমন অবস্থায় সুমনের বন্ধু, সহপাঠী, শুভকাঙ্ক্ষী দানশীল মানুষদের কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য অর্থ সহায়তার আকুতি জানিয়েছেন মা গোলে আফরোজ। তিনি বলেন, আপনারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে যদি সাধ্যমতো একটু আর্থিক সহযোগিতা করতেন, তাহলে হয়তো আমার ছেলেটার চিকিৎসাটা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো। জীবন-মৃত্যু সৃষ্টিকর্তার হাতে। তারপরও যদি সকলের সহযোগিতায় তার চিকিৎসা চালিয়ে নেওয়া যায়, সেই জন্যই সকলের কাছে এই আহ্বান।

শেখ মাহফুজুল বারী সুমনের চিকিৎসায় সহায়তার হাত বাড়াতে:

বিকাশ ০১৯১২-১৪৩৪৩৭

অথবা নগদ ০১৭১১১৫৪৭৬৪ করতে পারেন।

এছাড়াও তাকে অর্থ সহায়তা পাঠাতে পারেন- মেসার্স স্মার্ট ট্রেড, হিসাব নম্বর- ০০৭২১১২০০০০০১১১৮, ইউসিবি ব্যাংক লিমিটেড, বগুড়া শাখা অথবা মেসার্স স্মার্ট ট্রেড, হিসাব নম্বর- ০০০৪-০২১০০২৭৯৪৮, ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, বগুড়া শাখা।