নর্দান মেডিকেলে কর্মরতদের বেতন পরিশোধ না করায় হাসপাতালের গেটে তালা

মালিকপক্ষ কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় সমস্যা সমাধানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন বরাবর আবেদন করেন

নর্দান মেডিকেলে কর্মরতদের বেতন পরিশোধ না করায় হাসপাতালের গেটে তালা

স্টাফ রিপোর্টার ♦ বেতন-ভাতা পরিশোধ না করায় ফুঁসে উঠেছে রংপুর নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বুধবার সকালে নগরীর পূর্বগেট এলাকায় প্রতিষ্ঠানের সামনে বিক্ষোভ, মানববন্ধন সমাবেশ কর্মসূচী শেষে হাসপাতালের গেটে তালা মেরে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। সেই সাথে ২৬ মাসের বকেয়া ৫ কোটি টাকা বেতন-ভাতা দ্রুত পরিশোধ করা না হলে হাসপাতালের সামনে আমরন অনশন কর্মসূচী পালন করার হুমকি দিয়েছে তারা। 
মানববন্ধন সমাবেশে বক্তারা বলেন, নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২০২০ সাল থেকে চলতি মাস পর্যন্ত ২৬ মাস ধরে বেতন-ভাতা দিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার অজুহাত দেখিয়ে বেতন-ভাতা বন্ধ রাখলেও হাসপাতালে রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে গেছে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ার পর সবকিছু স্বাভাবিক হলেও হাসপাতালের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান করা হয়নি। এতে করে কর্মকর্তা-কর্মচারী, হাসপাতালের নার্স- টেকনোলজিস্টরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। হাসপাতালে আড়াই’শ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকুরী করলেও মালিক পক্ষের টালবাহানার কারণে অনেকে বকেয়া বেতন-ভাতার আশা না করে চাকুরী থেকে চলে গেছেন। বর্তমানে ১৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী হাসপাতালে সেবা কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন। এরপরেও  মালিকপক্ষ কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় সমস্যা সমাধানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন বরাবর আবেদন করেছেন।
বক্তারা আরও বলেন, হাসপাতলটি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে নানা-অনিয়মের মধ্যে চলছে। কর্তৃপক্ষ মেডিকেল কলেজ চালাতে না পারায় সম্প্রতি নর্দান মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের অন্য কলেজে মাইগ্রেশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি হাসপাতাল চালাতে না পারেন তবে বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করে আমাদের বিদায় করে দিক। এতে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না। 
মানববন্ধন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্বাস আলী, হামিদুর রহমান, তৈয়বুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ নার্স আনজুয়ারা বেগম, ওয়ার্ড মাস্টার ইনচার্জ হাবিবুর রহমান মিলনসহ অন্যরা। 
এ ব্যাপারে নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বেগম রোকেয়া লাভলী  বলেন, হাসপাতাল বন্ধ রয়েছে, এখন শিক্ষার্থী ভর্তিও বন্ধ। আমাদের প্রতিষ্ঠানের আয় নেই। আমি কি জমি-জমা বিক্রি করে কর্মচারীদের বেতন দিব। আমরা তাদের এক বছর আগেই ছাটাই করেছি। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে আমাদেরকে জিম্মি করার চেষ্টা করছে।   
হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ আনিসুর রহমান বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের ঝামেলা নিয়ে আমার কিছু জানা নেই। আমি নিজেও পাঁচ-ছয় মাসের বেতন পাবো। এখন এটা হাসপাতালের মালিকপক্ষ দেখবেন।