স্বেচ্ছায় রক্তদান তুচ্ছ নয় বরং বীরত্বের পরিচায়ক 

দেশে বছরে রক্তের চাহিদা থাকে প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ ইউনিট।

স্বেচ্ছায় রক্তদান তুচ্ছ নয় বরং বীরত্বের পরিচায়ক 

নিউজডোর ডেস্ক ♦ মানবিকতার সবচেয়ে বড় নিদর্শন হলো স্বেচ্ছায় রক্তদান। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে এই  সেবার গুরুত্ব অনেক। কারণ আমাদের দেশে বছরে রক্তের চাহিদা থাকে প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ ইউনিট। এই অবস্থায় কারো স্বেচ্ছায় রক্তদানের বিষয়টি অতি তুচ্ছ নয়, বরং তা বীরত্বের পরিচায়ক। তাই কারো প্রাণের স্পন্দন টিকিয়ে রাখতে আমাদের সবারই উচিত স্বেচ্ছায় রক্ত দান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা। রংপুরে আয়োজিত প্রথম রক্তদাতা সমাবেশে বক্তাগণ এসব কথা বলেন।
রংপুর টাউনহলে শুক্রবার স্বেচ্ছাসেবক, রক্তদাতা, রক্তযোদ্ধা ও সমাজসেবকদের নিয়ে রক্তদাতা সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সকালে এই সমাবেশের উদ্বোধন করেন সিটি প্রেসক্লাব, রংপুর এর সভাপতি স্বপন চৌধুরী। এশিয়া ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ স্ক্যাবল এসোসিয়েশনের সভাপতি খুরশীদুজ্জামান আহমেদ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে সাবেশে বক্তব্য রাখেন এশিয়া ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, পরিচালক হারুন অর রশিদ, ইমেজ গ্রুপ অব এডুকেশন, রংপুরের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. আল মামুন আক্তারুজ্জামান, মুন ট্রেডার্স রংপুরের পরিচালক বেলাল হোসেন ও রংপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্য সৈকত আব্দুর রহিম।
বক্তাগণ বলেন, রক্ত মানুষের জীবনীশক্তির মূল এবং বেঁচে থাকার প্রধান হাতিয়ার। পৃথিবীতে রক্তই একমাত্র ‘জীবন্ত সত্তা’ যার মাঝে কোনো জাতি ভেদ, ধর্ম ভেদ, বর্ণ ভেদ নেই। ধনী-গরিব, সাদা-কালো সবারই রক্তের বৈশিষ্ট্য ও বর্ণ একই। মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে একে অপরের প্রতি রয়েছে কিছু সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা। আর এর মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদান অন্যতম। পৃথিবীতে এখনো কৃত্রিম রক্ত তৈরি করা সম্ভব হয়নি। আর এ কারণেই মানুষের জীবন-মরণ নির্ভর করছে শুধুই স্বেচ্ছায় দান করা এক ব্যাগ রক্তের ওপর। বিশেষ করে থ্যালাসেমিয়া, রক্তস্বল্পতা, হিমোফিলিয়া রোগীর পাশাপাশি প্রসূতির রক্তক্ষরণ, অপারেশন, অগ্নিদগ্ধ বা দুর্ঘটনাজনিত রোগীর ক্ষেত্রে রক্তের প্রয়োজন দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে তারা আরও বলেন, নির্দিষ্ট সময় পর পর রক্তদানের অভ্যাসে একজন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে না বরং তা শরীরকে আরও সুস্থ করে তোলে। রক্ত দান করলে শরীরের অস্থিমজ্জা নতুন রক্তকণিকা তৈরির জন্য উদ্দীপ্ত হয়।
রক্তদাতা সমাবেশ কমিটির সার্বিক ব্যবস্থাপক সৈকত আব্দুর রহিম বলেন, এখন আর পেশাদার (টাকার বিনিময়ে রক্ত বিক্রি করা) রক্তদাতাদের ওপর নির্ভর করতে হয়না। কারণ অনেকে এখন মানুষের জীবন বাঁচাতে ব্যক্তিগতভাবে স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। এই সমাবেশের মাধ্যমে এক অপরের সঙ্গে পরিচয়ের পাশাপাশি তাদের একটি শক্ত প্লাটফরম তৈরি হবে এবং তাদের মাধ্যমেই আরো অনেকে রক্তদানে উদ্বুদ্ধ হবেন। সমাবেশে রংপুর বিভাগের আট জেলার দুই শতাধিক রক্তদাতা অংশ নেন। ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তাদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।