বেরোবি উপার্চায ড. কলিমউল্লাহ’র মেয়াদ শেষ

প্রজ্ঞাপন জারি নাকি যোগদানের তারিখ ধরে মেয়াদ শেষ হবে, চলছে তুমুল বিতর্ক

বেরোবি উপার্চায ড. কলিমউল্লাহ’র মেয়াদ শেষ

বেরোবি প্রতিনিধি ♦ বেরোবি উপার্চায ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ’র মেয়াদ শেষ! বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ’র নিয়োগের পর ৪ বছর মেয়াদ শেষ হয়েছে গত (৩১ শে মে)সোমবার। তাকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয় ২০১৭ সালের ০১লা জুন । সে হিসেবে ২০২১ সালের ৩১ শে মে তাঁর নিয়োগের ৪ বছর মেয়াদ পূর্ণ হয়। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন ২০১৭ সালের ১৪ জুন।  

জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করে ২০১৭ সালের ০১লা জুন প্রজ্ঞাপন জারি জারি করে সরকার। প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার সময় তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর উপ-উপাচার্য ছিলেন। সেখান থেকে ১২ জুন তিনি পদত্যাগ করেন এবং ১৩ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এরপর ১৪ জুন তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন।

তবে উপাচার্য হিসেবে ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ’র মেয়াদ প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকে গণণা হবে নাকি তাঁর যোগদানের তারিখ থেকে শেষ হবে তা নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন,  ‘ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে নিয়োগের যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছিল সেটা ছিল ১ জুন। প্রজ্ঞাপনে তো সেভাবে বলা থাকেনা আর বলা নাইও। বলা আছে এই নিয়োগ অবিলম্বে কার্যকর হবে। উপাচার্য যেদিন যোগদান করেছেন সেদিন থেকেই তার মেয়াদকাল শুরু হবে বলেই তিনি (উপাচার্য) ধরেছেন। কিন্তু আমরা অন্য জায়গায় খবর নিয়ে দেখলাম যেদিন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় সেদিন থেকেই চারবছর গণনা করা হয়। এরমানে গতকালই(৩১ শে মে) তাঁর চারবছর পূর্তি হয়ে গেছে। এখানে উনার তো সেভাবে যোগদান করার কিছুই নাই। প্রজ্ঞাপন জারি হলেই তার মেয়াদকাল সেদিন থেকেই জারি হবে এবং তিনি যে দিনই যোগদান করুক না 
কেন। তিনি এটাকেই অধিকার সুরক্ষা পরিষদের ব্যাখ্যা উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ‘মেয়াদকাল নিয়ে যে ধোঁয়াশা চলছে এটার জাস্টিস হচ্ছে এখানে দুটো জিনিস আছে। সেটা হলো যদি নিয়োগের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি দেশের মধ্যেই থাকে তাহলে সেটা পরেরদিন থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা। যে তারিখে তার প্রজ্ঞাপন হয়েছে তার পরের দিন থেকেই যোগদান করে ইমপ্লাই হবে। এ ক্ষেত্রে বিদেশে থাকলে তিনি তার ছুটি শেষে যেদিন এসে যোগদান করবেন সেদিন থেকেই হিসাব হবে। নিয়ম যেটা যোগদান করার এ ক্ষেত্রে তিনি কি করেছেন সেটা আমার জানা নাই। 

এদিকে, উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তার ব্যক্তিগত সচিব আমিনুর রহমানেরও অফিস কার্যক্রম স্থগিতের দাবিতে প্রায় ঘন্টাব্যাপী তাকে অবরুদ্ধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

অধিকার সুরক্ষা পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, উপাচার্যের মেয়াদ শেষ। তাই তার পিএসও দায়িত্বে থাকতে পারবে না। এ কারণে তাকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ স¤পাদক মশিউর রহমান বলেন, প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভিসির মেয়াদ গতকাল(৩১ শে মে) শেষ হয়েছে। ভিসি নাই তো পিএস কীসের? আমরা তাকে স্বসম্মানে রুম থেকে বের হতে বলেছি। উনি বের হননি।’

এ বিষয়ে পিএস আমিনুর বলেন, ‘আমার কক্ষে তারা এসেছেন। আমি বলেছি আপনাদের কথায় আমি অফিস ত্যাগ করতে পারি না। তাই আমি নির্দিষ্ট সময় অফিস করব। মন্ত্রণালয়ের নির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তাফা কামাল বলেন,‘স্যারের মেয়াদ কবে শেষ হয়েছে তা আমার জানা নেই। প্রজ্ঞাপন না দেখে বলতে পারব না।