জাতীয় ছাত্র সমাজের সহযোগিতায় বেরোবিতে ভর্তি হলো শাহীন

জাতীয় ছাত্র সমাজের সহযোগিতায় বেরোবিতে ভর্তি হলো শাহীন

স্টাফ রিপোর্টার ♦ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সি ইউনিটে ৬৮তম হয়েও অর্থের অভাবে ভর্তি হতে না পারা শাহীন আলমের পাশে দাঁড়িয়েছে জাতীয় ছাত্র সমাজ। জাতীয় ছাত্রসমাজের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন রোববার দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগে শাহীন আলমকে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। ওই বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. মোঃ নুর আলম সিদ্দিকের সঙ্গে দেখা করেন ছাত্র নেতা আল মামুন। 

শাহীন আলমের বাবা তাছির উদ্দিন বলেন, খুব কষ্ট করি ছাওয়াটাক পড়ালেখা করাওছো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়োত ভর্তি করার মতো হাজার দশেক টাকা হামার নাই। ওই তকনে খুব চিন্তাত আছনু। গতবারও এই ছাওয়াটাক টাকা না থাকার জন্তে বিশ্ববিদ্যালয়োত ভর্তি করেবার পারো নাই। এবার জাতীয় ছাত্রসমাজের ন্যাতা আল মামুন মোর ছাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করি দেবে কছিল। আইজ রবিবার দুপুরে মোর ছাওয়া মোক মোবাইল করি কইল, আব্বা মুই বিশ্ববিদ্যালয়ত ভর্তি হনু। ছাত্র সমাজের মামুন ভাই ভর্তি করি দিছে নিজে। ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা হইলে মামুন ভাই হামার পাশোত থাকার আশ্বাসও দিছে।
এ সময় শাহিন আলম বলেন, আমার মায়ের স্বপ্ন হলো প্রশাসন ক্যাডার হওয়ার। আমি আমার মায়ের স্বপ্ন পূরন করতে চাই। আমি যেন দেশের জন্য কিছু করতে পারি। আমি যেন ভালো কিছু করতে পারি। দরিদ্র মা-বাবার পক্ষে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর সামর্থ্য নেই। সংসার চালানোই মুশকিল। তার মধ্যে আমার পড়াশোনার খরচ দেওয়া তো অসম্ভব। কিন্তু তার পর স্বপ্ন দেখেছি, কষ্ট করে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হব। এবার ভর্তি হয়ে গেছি। আর পড়াশোনা করে মায়ের স্বপ্ন পূরণ করব।

জাতীয় ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, আমি শাহিন আলমকে ৫ জানুয়ারি রাতে রংপুর নগরীর কাচারী বাজার এলাকায় সাংবাদিকের মাধ্যমে ডেকে কথা দিয়েছিলাম শাহিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দিব। তার হোস্টেলের সিটের ব্যবস্তা করে দিব। শাহিনের যে কোন সমস্যা হলে আমাকে ফোন করতে বলেছি। তার পাশে আমি সব সময়ে থাকবো ইনশা আল্লাহ্।

আল মামুন আরও বলেন, আমাদের দেশের সব খানেই মেধাবী শিক্ষার্থী থাকেন তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পরেও ভর্তি হতে পারে না অনেক শিক্ষার্থী। শাহিন আলম একজন মেধাবী ছাত্র। শুধু বেগম রোকেয়া নয়, বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছিলেন সে। কিন্তু অর্থের অভাবে কোথাও ভর্তি হতে পারেন নাই। সামান্য কিছু অর্থের কারণে শাহিনের পড়াশুনার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। গতকাল রবিবার দুপুরে আমি নিজেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে মেধাবী শাহীন আলমকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করায় দেই। এর আগে শনিবার মেধাবী শিক্ষার্থী শাহীন আলমের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জা। শাহীন আলমের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার জন্য নগদ ২০ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছেন পুনাক।