ক্লাব-মদ নিয়ে উত্তপ্ত সংসদ

আইনে কোথায় বলা আছে, মুসলমানরা মদ খেতে পারবেন না। আইন এখানে এনে দেখাক। পদ ছেড়ে দিক।

ক্লাব-মদ নিয়ে উত্তপ্ত সংসদ

নিউজডোর ডেস্ক ♦ ক্লাব, মদ ও জুয়া নিয়ে হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে জাতীয় সংসদ। বৃহস্পতিবার সকালে বৈঠকের শুরুতে এই অনির্ধারিত আলোচনায় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও তরিকত ফেডারেশনের পাঁচ সাংসদ অংগ্রহণ করেন।

আলোচনার সূত্রপাত করেন, জাতীয় পার্টির সাংসদ মুজিবুল হক। তিনি চিত্রনায়িকা পরীমনি ইস্যু নিয়ে আলোচনা শুরু করে বলেন, যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটা বোট ব্লাব। কে করল এই ক্লাব? এই ক্লাবের সদস্য কারা হয়? শুনেছি ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা দিয়ে এই ক্লাবের সদস্য হতে হয়। এত টাকা দিয়ে কারা ক্লাবের সদস্য হন আমরা তো ভাবতেই পারি না। এসব ক্লাবে মদ খাওয়া হয়। জুয়া খেলা হয়।

বাংলাদেশে মদ খেতে লাইসেন্স লাগে। সেখানে গ্যালন-গ্যালন মদ বিক্রি হয়। লাইসেন্স নিয়ে মদ খেতে হলে এত মদ তো বিক্রি হওয়ার কথা নয়। তিনি প্রশ্ন রাখেন, সরকারি কর্মকর্তারা কিভাবে এসব ক্লাবের সদস্য হন? এত টাকা খোথায় থেকে আসে?

তিনি আরও বলেন, গুলশান-বারিধারা এলাকায় ডিজে পার্টি হয়। সেখানে ড্যান্স হয়। নেশা করা হয়। মদ খাওয়া হয়। এসব আমাদের আইনে নেই, সংস্কৃতিতে নেই , ধর্মে নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আপনি সরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন, কেন এসব হচ্ছে? কেন এগুলো বন্ধ করা হবে না? ওইসব ক্লাবের সদস্য কারা হয়?

মুজিবুল হকের পরে কথা বলেন, জ্যেষ্ঠ সাংসদ শেখ ফজলুল করিম সেলিম। তিনি বলেন, এ তো বোট ক্লাব। জিয়াউর রহমান স্টিমার ক্লাব করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু মদ-জুয়ার লাইসেন্স বন্ধ করে দিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান আবার দিয়েছিলেন। হিজবুল বাহার করেছিলেন। যারা অপরাধের শুরু করেছেন, তাদের আগে বিচার করা উচিত। ওখান থেকে ধরতে হবে।

তার জবাব বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, আমাদের বিরোধীদলের এক সংসদ সদস্য একটা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু সিনিয়র এক সদস্য কোথায় চলে গেলেন? বিদেশি কুটনীতিক, ডোম ও বিভিন্ন ধর্মের  মানুষের জন্য জিয়াউর রহমান মদের বৈধতা দিয়েছিলেন। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন যে জিয়াউর রহমান মুসলমানদের জন্য মদের লাইসেন্স দিয়েছেন তাহলে আমি সংসদ পদ থেকে পদত্যগ করব।

হারুনের বক্তব্যের জবাবে শেখ সেলিম বলেন, লাকী খানের নাচের কথা ভুলে গেলেন? হিজবুল বাহার?  জিয়াউর রহমান এগুলো করেছিলেন। এসবের জন্য দায়ী বিএনপি। সত্যকে স্বীকার করে নিতে হবে।

এরপর তরিকত ফেডারেশনের সাংসদ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, হারুন সাহেবের সদস্যপদ আজই ছেড়ে দেওয়া উচিতভ উনি বললেন, জিয়াউর রহমান মুসলমানদের মদ খাওয়ার পারমিশন দেননি। উনি দেখাক, আইনে কোথায় বলা আছে, মুসলমানরা মদ খেতে পারবেন না। আইন এখানে এনে দেখাক। পদ ছেড়ে দিক।

এরপর জাতীয়পার্টির সদস্য ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু লাইসেন্স দেননি। তারপর আইনটার অপব্যবহার হচ্ছে। একজন চিকিৎসক দিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে নেয়। জীবন বাঁচানোর জন্য প্রতিদিন মদ খেতে হবে। তারপর লাইসেন্স নেওয়া হয়। বিএনপি এই লাইসেন্স দিয়েছিল।