মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অ্যাড. ইলিয়াসের নিউজডোরকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকার
২৯ জানুয়ারী ভোর ৪টায় রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি
নভেল চৌধুরী ♦ রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. ইলিয়াস আহমেদ ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন। রোববার (২৯ জানুয়ারী) ভোর ৪টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি দুই ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। অ্যাড. ইলিয়াস আহমেদের প্রথম জানাজার নামাজ রংপুর কোর্ট চত্ত্বরে সকাল সাড়ে ১১টায়, দ্বিতীয় জানাজ রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বেলা ১২টায় ও সর্বশেষ বাদ যোহর কৈলাশ রঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা শেষে শালবন মিস্ত্রিপাড়া কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
অ্যাড. ইলিয়াস আহমেদ ১৯৬৭ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন। ১৯৭০ সালে তিনি রংপুর সরকারী কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি এবং রংপুর মহকুমা ছাত্রলীগের নেতা থাকা অবস্থায় ২ মার্চ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতার পরে শেষ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে যুবলীগ গঠন হলে তিনি রংপুর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের পর তিনি বিভিন্ন মামলায় নির্যাতনের শিকার হন এবং যুবলীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুব সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৮৪ সালের পর তিনি দীর্ঘ ২০ বছর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পরবর্তীতে সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। অ্যাড. ইলিয়াস আহমেদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংষ্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠনের মাঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাড. ইলিয়াস আহমেদের মুক্তিযুদ্ধে অবদান ও রাজনৈতিক জীবনে ত্যাগের কথা উল্লেখ করে অনেকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন এবং মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনাসহ শোক সন্তোপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন । রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন মন্ডল মওলা বলেন, রংপুরের রাজনীতির আকাশে আরও একটি নক্ষত্র হারালাম। অ্যাড. ইলিয়াস আহমেদের সময় অনেক নেতা দলবদল করে অনেক সুযোগ সুবিধা নিয়ে অনেক পদ গ্রহণ করলেও তিনি আমৃত্যু একজন মুজিব সৈনিক হিসাবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এ প্রজন্মের রাজনীতি চর্চাকারীদের কাছে অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মাজেদ আলী বাবুল বলেন, আমরা রাজনীতিতে একজন অভিভাবক হারালাম। তাঁর শূন্যস্থান কখনো পূরণ হওয়ার মতো নয়।রংপুর মহানগর জাসদের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ বলেন, রংপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বর্ষিয়ান নেতার অবদান অনস্বীকার্য। এ্যাড. ইলয়াস আহমেদের শূণ্যতা পূরণ হবার নয়। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ষ্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনে তিনি আমাদের সাথে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন।