রংপুরে অসচ্ছলদের পাশে অনলি হিউম্যানের খাদ্য সহায়তা
মানবিক সহায়তার পোস্ট দেখে খাদ্য নিয়ে বাড়ি বাড়ি অনলি হিউম্যান
স্টাফ রিপোর্টার ♦ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব স্থবির করে দিয়েছে জনজীবন। দিন দিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সাথে লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর সারি। বেড়েছে সাধারণ ছুটি। দিন যত গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে কর্মহীন মানুষের খাবারের জন্য আহাজারি। কঠিন এ পরিস্থিতিতে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও খাদ্যের যোগানে ঘর ছেড়ে বাইরে বের হচ্ছেন দিনমজুর আর নিম্নআয়ের মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এগিয়ে এসেছে।
একইভাবে কাজ করছেন রংপুরের একঝাক স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে গড়ে উঠা ফেসবুক ভিত্তিক প্লাটফর্ম 'অনলি হিউম্যান'। তারা নিজেদের সামর্থ্য থেকে অসচ্ছল ও কর্মহীন মানুষদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে খাদ্য সহায়তা। অদৃশ্য করোনায় থাবায় ঘরবন্দী অসহায় দুস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টায় এ প্রজেক্টের নাম দিয়েছে মানুষের জন্য।
সরকারঘোষিত চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে এখন পর্যন্ত শতাধিকের বেশি অসচ্ছল, দুস্থ, কর্মহীন ও নিম্নআয়ের মানুষদের বাড়ি বাড়ি খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে অনলি হিউম্যান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পাওয়া মানবিক সহায়তার পোস্ট দেখে খাদ্য সহায়তা নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন অনলি হিউম্যানের স্বেচ্ছাসেবকরা। তাদের দেওয়া খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ, লবণ, জীবাণুনাশক সাবান, প্যারাসিটামল ট্যাবলেট রয়েছে।
নিজেদের হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে অসহায় দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষের পাশে অনলি হিউম্যান ছুটছে রংপুর অঞ্চলে। কখনো দিনের বেলায় খাদ্যসামগ্রী প্যাকেট করে রাতের বেলায় অসহায় দুস্থদের ঘরের দরজায় পৌঁছে দিচ্ছে। আবার কোনো কোনো দিন রাতে প্যাকেট সাজিয়ে দিনের বেলার পৌঁছে দিচ্ছেন খাদ্য সহায়তা।
অনলি হিউম্যানের এডমিন আকতার মুন্না জানান, লকডাউন শুরুর দিকে ফেসবুকে তারা একটি মানবিক পোস্ট করেছিল। সেই পোস্টে অনেকে সাড়া দেন। কেউ কেউ স্বেচ্ছাসেবী হয়ে অসহায় দুস্থ মানুষদের জন্য কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে সবার মতামতের ভিত্তিতে ফেসবুক ভিত্তিক প্লাটফর্ম অনলি হিউম্যান তৈরি করা হয়। এই গ্রুপে রংপুর বিভাগের আট জেলায় ২০ জন মডারেটর রয়েছে। তারা অসহায় দুস্থ মানুষদের নিয়ে বিভিন্ন মানবিক আবেদনগুলো পর্যবেক্ষণ করে গ্রুপের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
করোনার বিস্তার রোধে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষদের ঘরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করেছেন তারা। এ দুর্যোগময় সময়ে সামর্থ্য অনুযায়ী সকলকে এগিয়ে আসলে নিম্ন আয়ের প্রত্যেকটি মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হবে। এতে করোনা মোকাবিলা সহজ হবে দাবি এ সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীদের।