রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে দুদকের অভিযান (ভিডিও)

সেবা নিতে কর্মচারীদের দিতে হয় বখশিস

স্টাফ রিপোর্টার ♦ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়া। কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না রমেক হাসপাতালের এই অনিয়ম, দুর্নীতি। কর্মচারিদের বখশিস না দিলে ঘোরে হুইল চেয়ার, ট্রলির চাকা। তবে হাসপাতালের এই অনিয়ম -দূর্নীতি নিয়ে রংপুরের এক বাসিন্দা দুদকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারী ঢাকা থেকে দুদক রংপুর সমন্বিত কার্যালয়কে সরেজমিনে তদন্ত করার নির্দেশনা দেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনিয়ম ও দূর্নীতি তদন্তে আসে ৭ সদস্যদের দুদকের দল। দুদক রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বেলাল হোসেনের নেতৃত্বে অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী পরিচালক সাবদারুল ইসলাম, উপ-সহকারী পরিচালক জয়ন্ত সাহা, রুবেল হোসেনসহ দুদকের ৩ সদস্য। 

রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বেলাল হোসেন বলেন, ঢাকা অফিস থেকে গত ৫ ফেব্রুয়ারী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনিয়ম-দূর্নীতি নিয়ে একটি অভিযোগ পাওয়ার প্রেক্ষিতে এ অভিযানে সেবা নিতে কর্মচারীদের বখশিস দিতে হয় এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। সেই সাথে ওয়ার্ডগুলোতে রোগীরা ঠিকমত সেবা পাচ্ছে না। আমরা এসব বিষয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সেই সাথে তদন্ত প্রতিবেদন আমরা ঢাকায় পাঠাবো। এরপর হেড অফিসের নির্দেশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
তিনি আরো জানান, হাসপাতালের বহিস্কৃত কর্মচারী আশিকুর রহমান নয়নকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহিস্কার করলেও তিনি হাসপাতালে অবস্থান করে বিভিন্ন বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করছে। তাকে প্রতি রোববার ওয়ার্ড মাস্টারের কাছে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার নির্দেশনা থাকলেও তিনি সেই নির্দেশনা ভঙ্গ করেছেন। সর্বশেষ সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন। নিজের প্রভাব বিস্তার করে হাজিরা খাতায় ছুটির দিনসহ সেপ্টেম্বর মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত স্বাক্ষর করেছেন। সেপ্টেম্বর মাস ৩০ দিন হলেও হাজিরা খাতায় ৩১ দিনের স্বাক্ষর থাকায় বোঝা যায় হাসপাতালে তিনি কতটা প্রভাব বিস্তার করে আছেন। 

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ আ.ম আখতারুজ্জামান বলেন, রোগীদের ট্রলিতে করে ওয়ার্ডে নিতে বখশিস দেয়া, হাসপাতালের চর্তুথ শ্রেণির কর্মচারীদের অনিয়ম এবং চিকিৎসা সেবায় গাফিলতি’র বিষয় নিয়ে দুদক কর্মকর্তারা বলেছেন। বখশিস নেয়াসহ অনিয়মগুলোর সত্যতা রয়েছে। আমরা অনিয়মগুলো দূর করার চেষ্টা করছি। এ হাসপাতালে আমি ও পরিচালক স্যার দু’জনই নতুন। আমি পরিচালক স্যারসহ অন্যান্যদের নিয়ে বসে সমস্যাগুলো নিরসনে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। সেই সাথে উত্তরাঞ্চলের মানুষদের চিকিৎসাসেবা নিতে হয়রানি কিংবা বখশিস দিতে না হয় সেটি নিশ্চিত করবো। এছাড়া চিকিৎসা সেবার মান বাড়ানো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে।