আজহারীকে দেখে ছুটে আসেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা

খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষদের সাথে মিশতে আমার অসম্ভব ভালো লাগে: আজহারী

আজহারীকে দেখে ছুটে আসেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা
ছবি: সংগৃহীত

নিউজডোর ডেস্ক ♦ মালেশিয়ার কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক ও বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীকে দেখে ছুটে এসেছেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা। বিষয়টি নিজের ভেরিভাইড ফেসবুক পেইজে পোস্ট করেছে মিজানুর রহমান আজহারী।

তিনি লিখেছেন, কুয়ালালামপুরের ডাউনটাউনে দুপুরে লাঞ্চ সাড়তে আমার টিম নিয়ে একটা এরাবিয়ান রেস্টুরেন্টে ঢুকেছিলাম। একটি কন্সট্রাকশন সাইট থেকে কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিকভাই আমাকে দূর থেকে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করতে দেখে।

তার কিছুক্ষণ পর থেকে দফায় দফায় কয়েকটি গ্রুপে তারা রেস্টুরেন্টের নিচে জমা হতে থাকে।

রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার এসে জানালো— “আপনার সাথে দেখা করার জন্য আপনার দেশের কিছু লোক নিচে অপেক্ষা করছে শুনেই আমি ওপর থেকে নিচে নেমে এলাম। এসে দেখি ক্লান্ত শ্রান্ত ঘর্মাক্ত শরীরে আমার কলিজার টুকরা ভাইগুলো দাঁড়িয়ে আছে। মুসাফাহ করবে বলে অনেকেই তাড়াহুড়ো করে হাত ধুয়ে এসেছে। সিক্ত হাত, মলিন চেহারা, উসকো-খুসকো চুল। কারও মাথায় সেফটি হেলমেট। কারও হাতে সিমেন্ট লেগে আছে, কারও গায়ে আলতো ধুলোবালি। কিন্তু কেমন যেন একটা আত্মিক প্রশান্তি অনুভব করছিলাম। সবার সাথেই মুসাফাহ করলাম। কুশল বিনিময় করলাম।

খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষদের সাথে মিশতে আমার অসম্ভব ভালো লাগে। নির্মল তাদের হাসি। কোনো ভনিতা নেই। নেই হৃদয়ের প্যাঁচঘোচ। যথারীতি আবেগঘন কিছু অভিব্যক্তি— “হুজুর, প্রতি রাতে আমনের ওয়াজ শুনি। আমরা আমনের ভক্ত। আমগো লাইগ্যা দু কইরেন আহা! কি দরদমাখা অকপট কথাবার্তা। এজন্যই হয়তো প্রিয় নবিজী শ্রমজীবীদের এতো বেশি ভালোবাসতেন।

সহিহ বুখারিতে এসেছেকোদাল চালাতে চালাতে একজন শ্রমজীবী সাহাবির হাতে কালো দাগ পড়লে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর হাতে আলতো করে পরম মমতায় চুমু খেয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

জীবিকার তাগিদে প্রতিবছর মালয়েশিয়ায় অন্যান্য পেশার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিক এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী আসেন। এয়ারপোর্টে, সুপারশপে, পাম বাগানে এবং বিভিন্ন ফ্যাক্টরি এলাকাগুলোতে প্রিয় ভাইদের সাথে আমার প্রায়সই দেখা হয়। খুব আপন লাগে তাদের। তাদের খোঁজ-খবর নিতে, তাদের সাথে সুখ-দুঃখের আলাপ করতে খুব ভালো লাগে।

শ্রমিকদের ঘামেই গড়ে উঠে নগর বন্দর সভ্যতা। তারাই সভ্যতা গড়ার কারিগর। তিনটি সেক্টরের টাকায় আমার বাংলাদেশ চলে: কৃষি, পোশাক শিল্প এবং রেমিটেন্স।প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে। তাই, প্রবাসী শ্রমজীবীদের স্বার্থ প্রতিটি দূতাবাসে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা উচিত। ইসলামে সকল পেশাই মর্যাদাপূর্ণ। আসুন শ্রমজীবীদের সম্মান দিয়ে কথা বলি। তারাই উন্নয়নের আসল নায়ক- তারাইসুপার হিরো