দেড় বছর পর রংপুর চিড়িয়াখানায় জোড়া বাঘ, যে নাম রাখা হলো

দেড় বছর পর রংপুর চিড়িয়াখানায় জোড়া বাঘ, যে নাম রাখা হলো

নভেল চৌধুরী ♦ ২০২২ সালের পর থেকে বাঘ শুন্যতায় ভুগছিল রংপুর চিড়িয়াখানা। বাচ্চা থেকে বড়, যেকোন বয়সী দর্শনার্থীরা চিড়িয়াখানায় এসে বাঘ দেখতে না পেরে মন খারাপ করে চলে যেতেন। ছোট্ট-ছোট্ট শিশুরা বাঘ না দেখতে পেরে কান্না করে ফিরে যেত বাসায় এমন ঘটনাও কম ঘটেনি। কবে বাঘ আসবে এ নিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটল রংপুরবাসীর। রংপুর চিড়িয়াখানায় দীর্ঘদিন পর এলো জোড়া বাঘ। প্রাথমিকভাবে তাদের নাম রোমিও-জুলিয়েট রাখা হলেও পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন হতে পারে বলে জানায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। বড় ট্রাকে লাল কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে দুটো ভিন্ন খাঁচায় করে নিয়ে আসা হয় বাঘ দুটোকে। ট্রাকে খাঁচায় বন্দি থাকাকালীন একটি বাঘ শান্তভাবে ঘুমিয়ে থাকলেও আরেকটি বাঘ কয়েকবার গর্জন করে। কোনও প্রকার অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে ট্রাকে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী। অনেকদিন পর রংপুর চিড়িয়াখানায় বাঘ আসার কথা শুনে আগে থেকেই চিড়িয়াখানায় পাঁচ শতাধিক দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে বাঘের খাঁচার পেছনের দরজা দিয়ে ঢোকানো হয় বাঘ দুটোকে। নিরাপত্তাকর্মীদের বাঁশির শব্দ দর্শনার্থীদের নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখার কথা বারবার স্বরণ করিয়ে দিচ্ছিল। গণমাধ্যমকর্মীরাও বেশ উচ্ছ¡াসিত হয়ে ছবি ধারণ করছিলেন। ক্রেনে করে প্রথম খাঁচাটি ট্রাক থেকে ধীরে ধীরে নামানো হয়। খাঁচার ভিতরে থাকা বাঘটি তখন পর্দার আড়াল থেকে অনেক লোকজন দেখে কৌতুহল বেশ ছটফট করছিল বাঘটি। যখন বাঘটিকে খাঁচার ভেতরে ঢোকানো হলো ঠিক সেই মুহুর্তে উচ্ছ¡াসিত দর্শনার্থীদের মাঝে আনন্দের জোয়াড়ে ভেসে ওঠে। এদিকে রংপুর চিড়িয়াখানার খাঁচায় ঢুকেই বাঘটি পানি পান করে। যখন ট্রাক থেকে প্রথম বাঘটিকে নামিয়ে নেয়া হয়, অন্যদিকে তার সঙ্গী বাঘটি বারবার পর্দার ফাঁক দিয়ে তার সঙ্গীকে খোঁজার চেষ্টা করছিলো। দুটো বাঘ আসায় আনন্দের জোয়ার বইছে রংপুর চিড়িয়াখানায়। অন্যদিকে এত মানুষ দেখে একটি বাঘ শান্ত থাকলেও অপর বাঘ গর্জন করতে থাকে। অপরদিকে বাঘগুলোকে খাঁচায় ঢোকানোর পরে দুটো বাঘের জন্মদিন পালন করে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। বাঘের খাঁচার সামনেই কেককাটার আয়োজন করা হয়। কেককাটা অনুষ্ঠানে অংশ নেন শত-শত দর্শনার্থী। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে রংপুরবাসীকে এ দুটো বাঘ উপহার দেয়া হয়েছে। আমরা ঢাকা জাতীয় চিড়িয়াখানা কতৃপক্ষকে জানিয়েছি যে, রংপুর চিড়িয়াখানায় আমরা দুটো বাঘ উপহার দেব এবং আমাদেরকে দুটো জলহস্তী জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে দিতে হবে। এরই প্রেক্ষিতে আজ এটি বাস্তবায়ন হলো। যেহেতু এ বাঘগুলো  আমরা ছোট থেকে বড় করেছি এজন্য তাদের খাওয়ার রুটিন সম্পর্কে রংপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। রংপুর চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর আম্বার আলী তালুকদার ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেসম্বরে তারা চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জন্মগ্রহণ করে তাই আমরা আজ রংপুরে আনন্দঘন পরিবেশে তাদের জন্মদিন পালন করলাম এবং প্রতিবছরই তাদের জন্মদিন পালন করা হবে। তাদের নাম প্রাথমিকভাবে রোমিও-জুলিয়েট রাখা হয়েছে। এখনও সঙ্গীহীন রয়েছে উট, হনুমান ও ইমু পাখির মেয়ে সঙ্গী এখনও নেই চিড়িয়াখানায়। আমরা এ নিয়েও কাজ করে যাচ্ছি।###