রংপুরের বদরগঞ্জে মরা তিস্তা নদী পুনঃখনন কাজের উদ্বোধন

রংপুরের বদরগঞ্জে মরা তিস্তা নদী পুনঃখনন কাজের উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার ♦ উত্তরবঙ্গের নদীগুলির স্বাভাবিক গতি ফেরাতে রংপুরের বদরগঞ্জে মরা তিস্তা নদী পুনঃখনন কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে বদরগঞ্জ উপজেলার সর্দারপাড়া পয়েন্টে এ কাজের উদ্বোধন করেন রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম মোঃ আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বদরগঞ্জ পৌর মেয়র আহাসানুল হক চৌধুরী টুটুল, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী সুইট, বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হকসহ অন্যরা। পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে ৬টি প্যাকেজের মাধ্যমে ঠিকাদাররা ৪ কিলোমিটার নদী খনন করবেন। 

বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হক জানান, এককালের উত্তরবঙ্গের নদ-নদীগুলোর প্রবাহের যোগানদাতা ছিল তিস্তা নদী। এসময় তিস্তা তিনটি ধারায় প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণে গঙ্গার সাথে মিলিত হতো। এই ত্রি-স্রোতা তিস্তার দক্ষিণ-পূর্ব দিকের ধারাটি করতোয়া, দক্ষিণবাহী মধ্যাংশে আত্রাই এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে পূর্ণভবা নদীরূপে প্রবাহিত ছিল। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার দক্ষিণাংশ হতে তিস্তার একটি শাখা বর্তমান নীলফামারী-রংপুর জেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মিঠাপুকুর উপজেলার শেষ ভাগে করতোয়া নদীর সাথে মিলিত ছিল। ১৭৭৪ সালের রেণেল মানচিত্রে এ নদীটিকে তিস্তা নামেই উল্লেখ করা হয়েছে।

ভূ-প্রাকৃতিক কারণে ১৭৮৭ সালে তিস্তা তার গতিপথ পরিবর্তন করে বর্তমান অবস্থায় প্রবাহিত হয়। তিস্তার খাত পরিবর্তনের ফলে উত্তরবঙ্গের নদীগুলি স্বাভাবিক গতি হারিয়ে ফেলে এবং শাখা নদীটিও তিস্তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

মুল নদীটি তিস্তা নামের পাশাপাশি এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কালের বিবর্তনে শাখা নদীটির তিস্তা নামটি বিলুপ্ত হয়ে এলাকা ভিত্তিক মিলিত উপনদীগুলির নাম অনুসারে দেওনাই, চাড়ালকাটা ও যমুনেশ্বরী নদী নামে পরিচিতি পায়। এককালের সেই তিস্তার শাখা বা বর্তমান যমুনেশ্বরী নদীরই পরিত্যাক্ত খাত এই “মরা তিস্তা নদী” যা বর্তমানে শীর্ণকার নালা। আমরা আশা করছি পুনঃখননের মাধ্যমে পুনরায় জীবন ফিরে পাবে।