চিলমারীতে ব্রহ্মপূত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঢল

চিলমারীতে ব্রহ্মপূত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঢল

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ♦ কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপূত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বী লাখো ভক্তের ঢল নেমেছে। করোনাকালিন সময়ে দুই বছর বন্ধ থাকার পর পাপ মোচন আর পূণ্য অর্জনে এবার পূণ্যার্থীরা দলে দলে আসছেন অস্টমী স্নান উৎসবে যোগ দিতে। তবে স্নানের জন্য র্নিধারিত ঘাট ও নারী পূণ্যার্থীদের জন্য কাপড় পাল্টানোর কোন ব্যবস্থা না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পরেছে তারা।
প্রায় ৪শ’ বছর ধরে চৈত্র মাসের শক্ল পক্ষের অস্টমী তিথিতে ব্রহ্মপূত্র নদে পাপমোচন ও পূণ্য অর্জনের জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখানে সমবেত হয়। পঞ্জিকা অনুযায়ী শুক্রবার রাত ৯টা ১১ মিনিট ১৬ সেকেন্ড থেকে শনিবার রাত ১১টা ৮মিনিটি ৭ সেকেন্ড পর্যন্ত স্নানের লগ্ন নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে দুর-দুরান্ত থেকে আসা পূন্যাথর্ীরা সারাদিনব্যাপী নিজেদের সুবিধামত সময়ে স্নানকার্য সম্পন্ন করবেন।
অনুষ্ঠানে বিশৃংখলা রোধে পুরো এলাকা জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের। গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে টহল দিচ্ছে র‍্যাব, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা।  তবে মেলা এলাকায় আলোর ব্যবস্থা না থাকায় রাতটা ভোগান্তিতে কেটেছে ভক্তদের। এছাড়াও স্নান উৎসবে বিভিন্ন সংস্কারের নামে জোড়পূর্বক চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠেছে।
    ঐতিহ্যবাহী স্নান উপলক্ষে চিলমারী ঘাট সংলগ্ন রাজারভিটাতে প্রায় এক কিলোমিটার ব্যাপী এলাকায় পূণ্যার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। হে মহা ভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য,তুমি আমার পাপ হরণ করো। মন্ত্র উচ্চারণ করে ব্রহ্মার নিকট কৃপা চেয়ে স্নান উৎসবে মেতে উঠেন পূণ্যাথর্ীরা।
 বাংলাদেশ বাহ্মণ সংসদ কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল কুমার চক্রবর্তী জানান, দুই বছর অপেক্ষার পর অধীর আগ্রহ নিয়ে আমরা এখানে পাপ মোচনের জন্য এসেছি। এবারকার পরিবেশ মোটামুটি ভাল। তবে রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় অন্ধকারে আমাদের দুশ্চিন্তার মধ্যে রাত কাটাতে হয়েছে। এছাড়াও স্নান পর্ব সেরে মহিলাদের কাপড় পাল্টানোর জন্য কোন নিরাপদ জায়গা না থাকায় মহিলারা ভীষণ অস্বস্থির মধ্যে ছিল। আগামীতে মেলা কর্তপক্ষ ও প্রশাসনের বিষয়টি দেখা দরকার।
অপরদিকে উলিপুর ব্রাহ্মণ সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব কুমার মজুমদার জানান, এখানে মেলা সংরক্ষণসহ বিভিন্ন কমিটির নামে বাহ্মণদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে ব্রাহ্মণরা এখানে এসেছেন তাদের কাছ থেকে জোড় করে চাঁদনেয়া হচ্ছে। পূণ্য স্থানে এধরণের কার্যক্রম মেনে নেয়া যায় না।
স্নান উৎসব কমিটির আহবায়ক বিঞ্চু চন্দ্র বর্মণ জানান, পরিবেশ অনুকূলে থাকায় দেশ-বিদেশ থেকে প্রায় ৫লাখ পূণ্যার্থী উৎসবে যোগ দিয়েছেন।