রংপুর সিটি কর্পোরেশনে হরিজনদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আহত-৩০

থমথমে অবস্থায় রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকা

রংপুর সিটি কর্পোরেশনে হরিজনদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আহত-৩০

স্টাফ রিপোর্টার ♦ রংপুরে হরিজনদের সাথে সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। সিটি কর্পোরেশন প্রাঙ্গনে হামলার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে সিটি কর্পোরেশন।
জানা যায়, রংপুর সিটি কর্পোরেশনে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বর্তমান বাজার দরের সাথে সংগতি রেখে বেতন বৃদ্ধি, ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন, নতুন নিয়োগসহ ১১দফা দাবিতে হরিজন আদায় সংগঠনের ব্যানারে রবিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে সিটি কর্পোরেশনের সামনে বিক্ষোভ করে হরিজনরা। মেয়র তাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকারি বিধি মোতাবেক বেতনের ১০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়ার হয়েছে বলে জানান। কিন্তু হরিজনরা তাদের ১১ দফা দাবী পূরণ না হলে কাজে ফিরবে না বলে ঘোষণা দেয়। এতে করে রবিবার রাতে নগরীর ওয়ার্ডগুলোতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। পরে মেয়র মধ্য রাতে নিজে উপস্থিত থেকে নগরী পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ ঘটনা নিয়ে হরিজন ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীরা একে অপরের মুখোমুখি অবস্থান করে। উত্তেজনার মাঝে সোমবার দুপুরে হরিজনরা ১১ দফা দাবী বাস্তবায়নে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে মানববন্ধন করে। পরে তারা সিটি কর্পোরেশন কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। এ সময় সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের সাথে হরিজনদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলের এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে সিটি কর্পোরেশন এলাকা থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলার ঘটনা তদন্তে প্যানেল মেয়র মাহবুবার রহমান মঞ্জুকে আহŸায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।    
হরিজন অধিকার আদায় সংগঠনের সভাপতি সুরেশ বাসফোর বলেন, বর্তমান সমাজে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সিটি কর্পোরেশনের অল্প বেতনে সংসার পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে অসুস্থতা বা সমস্যায় পরে কাজে না গেলে সিটি কর্পোরেশন হাজিরা কেটে নেয়, ছাটাইকরণের হুমকি দেয়, গালিগালাজ করে। আজ ১১ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সাথে কথা বলতে গেলে গুন্ডা বাহিনী দিয়ে আমাদের উপর হামলা করানো হয়। এতে আমাদের প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে এবং একজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। 
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, হরিজনদের সুরক্ষার জন্য আমি গামবুট, কোটিসহ বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী দিয়েছি। ইতোমধ্যে তাদের সকল যৌক্তিক দাবী প্রায় পূরণ করা হয়েছে। মাত্র দু’ঘন্টা পরিচ্ছন্নতার কাজ থাকলেও তারা সেটিও ভাল করে করে না। রাতে মাতাল হয়ে পড়ে থাকে। অথচ তাদের সুখে-দুঃখে আমি পাশে থাকলেও কুচক্রী মহলের ইন্ধনে তারা সিটি কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। রবিবার তারা ময়লা পরিস্কার না করলে আমি রাতে নিজে উপস্থিত থেকে নগরীর ময়লা পরিস্কার করিয়েছি। এরপর তারা বস্তায় করে ময়লা নিয়ে এসে নগরী নোংরা করেছে। আমি তাদের প্রতি সহানুভ‚তিশীল, কিন্তু কোন অন্যায় তো বরদাস্ত করতে পারি না। হরিজনরা সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করে। তাদের সরে যেতে বললে সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের উপর চড়াও হয় এবং পরবর্তীতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।