ভাষা সৈনিক ইসহাক চৌধুরীর আজ মৃত্যুবার্ষিকী
মুক্তিযুদ্ধে তিনি বৃহত্তর রংপুর জেলার স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান হিসেবে তাঁর নৈতিক ও আদর্শিক দায়িত্ব পালন করেন।
স্টাফ রিপোর্টার ♦ আজ ১৮ জুলাই, ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ ইসহাক চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী। মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে তিনি শহীদ হন। শহীদ ইসহাক চৌধুরী ’৫২র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠির বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সর্বদাই নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন। সে কারণে তাঁকে বার বার পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠির রোষানলে পড়ে কারাবরণ করতে হয়েছে। পাকিস্তানি সরকার তাঁকে রাস্টিকেট (জটঝঞওঈঅঞঊ) দিয়েছিল (দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা)। তারপরও তিনি নীতি-আদর্শ থেকে পিছুপা হননি।
ইসহাক চৌধুরী অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে সংগঠিত করে ভারতে প্রশিক্ষণ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন এবং নিজেও সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি বৃহত্তর রংপুর জেলার স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান হিসেবে তাঁর নৈতিক ও আদর্শিক দায়িত্ব পালন করেন।
সর্বদলীয় মুক্তিযোদ্ধা ঐক্যজোট, রংপুর অঞ্চল ইসহাক চৌধুীরকে মুক্তিযুদ্ধে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও অভিযানে নেতৃত্ব দানকারী হিসেবে ‘মরণোত্তর সম্মাননা’ প্রদান করেন।
এছাড়াও ২১ মার্চ ২০০২ ইং সালে ‘৫২ এর একুশের ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন কমিটি, রংপুর’ ইসহাক চৌধুরীকে ভাষা আন্দোলনে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ মরণোত্তর সংবর্ধনা প্রদান করেন। মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গ করায় ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমবেদনা জানিয়ে শহীদ ইসহাক চৌধুরীর স্ত্রীকে নিজ স্বাক্ষরিত চিঠি প্রদান করেন। এছাড়া শহীদ ইসহাক চৌধুরী ‘জয় পদক’ ও ‘সংবিধান পদক’ প্রাপ্ত হন ।
একজন দেশপ্রেমিক, সাহসী, নির্লোভ এবং উদার মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তি শহীদ ইসহাক চৌধুরী ছিলেন রংপুরের শহীদ মিনার, বেগম রোকেয়া মহিলা কলেজ, রংপুর কলেজ প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একজন। এখনও এই বিজয়ী বীর মুক্তিযোদ্ধার কথা, তার দেশপ্রেম ও মহান আদর্শের কথা রংপুরের সাধারণ মানুষের মুখে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার সাথে উচ্চারিত হয়।
শহীদ ইসহাক চৌধুরীর সন্তান এডভোকেট ফিরোজ কবির চৌধুরী গুঞ্জন পিতার মৃত্যুবার্ষিকীতে সকলের দোয়া চেয়েছেন।